মজুরি নির্ধারণের পর আজ মৌলভীবাজারের কিছু চা-বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সব বাগানে কাজে যোগ দিতে পারেননি তাঁরা।
রোববার (২৮ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকেই চা শ্রমিকরা কাজে নেমে পড়েন। তবে নতুন মজুরি নির্ধারণের পরও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে চা-শ্রমিকদের মধ্যে।
মৌলভীবাজারের ভাড়াউড়া চা-বাগানের এক শ্রমিক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিয়েছি। আমরা এখন বাগানের জন্য কাজ করব। যদিও ১৭০ টাকায় দ্রব্য মূল্যের বাড়তি দামের কারণে আমাদের সংসার চালানো কষ্টকর। সঙ্গে তো ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া খরচও রয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাই আমরা কাজে যোগ দিয়েছি। ’
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছিলাম প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দিবেন আমরা তা মেনে নিব। প্রধানমন্ত্রী মালিকদের সঙ্গে বসে মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করেছেন। তাই আমরা আজ থেকেই কাজে নেমেছি। ’
চা কোম্পানির এ মহাব্যবস্থাপক বলেন, আমাদের চা বাগানের শ্রমিকরা সবাই কাজে নেমেছেন। সবাই কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী চা-শ্রমিকরা নতুন মজুরি ১৭০ টাকা পাবেন। এ ছাড়া অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা অনুযায়ী তাঁদের পেছনে বাগানের দৈনিক ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা খরচ হবে।
প্রসঙ্গত, দেশের ১৬৭টি চা-বাগানে শ্রমিকের সংখ্যা দেড় লাখেরও বেশি। দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন শ্রমিকরা। গত ৯ আগস্ট এ আন্দোলন শুরু হয়। শুরুতে প্রথম কয়েকদিন কেবল ৪ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করা হয়। সে সময় মজুরি বৃদ্ধি ও মজুরি চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের সাত দিনের আলটিমেটাম দেওয়া হয়।
কিন্তু মালিক পক্ষ এ সময়ের মধ্যে বৈঠক বা সমঝোতায় না আসায় ১৩ আগস্ট থেকে লাগাতার পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শ্রমিকরা। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসক দফায় দফায় বৈঠক করেও কোনো সমাধান হচ্ছিল না। সবশেষ ২৭ আগস্ট রাতে প্রধানমন্ত্রী বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে নতুন মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করেন। এরপরে কাজে ফেরার আশ্বাস দেন চা-শ্রমিকরা।